মধুপুর
টাঙ্গাইল জেলা শহর থেকে ময়মনসিংহ যাবার পথে রসুলপুর মাজার নামক স্থানে গিয়ে বামপাশে মধুপুর জাতীয় উদ্যানের প্রধান ফটক।ঢাকা থেকে মধুপুরের সরাসরি বাস সার্ভিস রয়েছে।
মধুপুর জাতীয় উদ্যান রেঞ্জ অফিসার
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমনের অনেক স্থান থাকলেও টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর গড়ের শালবন একটি ঐতিহাসিক স্থান। বিশেষ করে মে মাসে শালের জীর্ণ পাতারা ঝরে পড়ে নতুন পত্রপুষ্পে সুশোভিত হয়। চারিদিকে শুধু সবুজের সমারোহ ও বনের অভ্যমত্মরে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন প্রজাতির চারা ও লতা-গুল্ম মন ভরিয়ে দেয়। তখন বনের মধ্যে এখানে সেখানে থাকে বেগুনী রঙ্গের জারম্নল বৃÿÿর মনকাড়া ফুলের বাহার । তবে জুন মাস এলেই সেই দৃশ্যপট পাল্টিয়ে শালবনটি ঘন জঙ্গলে রূপ নেয়।
মধুপুর জাতীয় উদ্যানের প্রধান গেট থেকে দোখলা রেস্ট হাউজ পর্যমত্ম দুরত্ব প্রায় ১০ কিঃ মিঃ। ১৯৭১ সালের ১৮-১৯ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এই রেস্ট হাউসে অবস্থান করেছিলেন। জঙ্গলের ভিতরে প্রবেশের প্রধান যানবাহন গাড়ী। আশেপাশে বনের অন্যান্য স্থানে ঘুরলে আরো খানিকটা পথ পারি দিতে হয়। মধুপুর জাতীয় উদ্যানের আশেপাশের এলাকাগুলো আদিবাসী অধ্যুসিত গ্রাম।
টাঙ্গাইল জেলা শহর থেকে ময়মনসিংহ যাবার পথে রসুলপুর মাজার নামক স্থানে গিয়ে বামপাশে মধুপুর জাতীয় উদ্যানের প্রধান ফটক। ফটকের পাশেই মধুপুর জাতীয় উদ্যান রেঞ্জ অফিস ও সহকারী বন সংরÿকের অফিস অবস্থিত। সেখানে গাড়ী থামিয়ে গেটে অনুমতি নিয়ে বনের অভ্যমত্মরে প্রবেশ করতে হয়। তাছাড়া আরও একটু সামনে ২৫ মাইল নামক স্থানে গিয়ে ডানদিকে প্রায় ৯ কিঃ মিঃ পথ পাড়ি দিয়ে দোখলা রেঞ্জ অফিস এবং দোখলা রেস্ট হাউজ-এর অবস্থান। সেখানেও অনুমতি নিয়ে বনের অভ্যমত্মরে ঢুকতে হয়। জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ময়মনসিংহ বন বিভাগের রসুলপুর রেঞ্জ কার্যালয় অবস্থিত। উহার পাশেই আছে জলই রেস্ট হাউজ ও মহুয়া কটেজ।
মধুপুর বনের অভ্যমত্মরের দৃশ্য অত্যমত্ম মনোমুগ্ধকর। সবুজ অরণ্যের প্রাকৃতিক দৃশ্য ও পরিবেশ নৈসর্গিক। ইট বিছানা রাসত্মায় চলতে চলতে রাসত্মার দুধারে সবুজ বন-বনানীর দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। মনি হারিয়ে যায় কোলাহলমুক্ত একটি নীরব-নিথর বনবিথির মাঝে।
মধুপুর জাতীয় উদ্যানের আয়তন ২০,৮৪০ একর। প্রধান ফটক দিয়ে বনের মধ্যে ঢুকলে চোখ পড়ে শুধু শালবন আর সবুজের সমারোহ। বনের অভ্যমত্মরে আছে নানান জাতের, নানা বাহারের গাছ-গাছরা, যেমন-শাল, বহেড়া, আমলকি, হলুদ, আমড়া, জিগা, ভাদি, অশ্বথ, বট সর্পগন্ধা, শতমূলী, জয়না, বিধা, আজুকি/ হারগাজা, বেহুলা ইত্যাদি। আছে বিভিন্ন প্রজাতির পাহাড়ী আলু, শটি; আছে নাম না জানা বিচিত্র ধরণের লতা-গুল্ম। দর্শনীয় প্রাণীদের মধ্যে আছে অসংখ্য বানর, হনুমান, আছে নানান জাতের পাখ-পাখালি, হরিণ, বন বিড়াল, বনমোরগ, বাগডাসা ইত্যাদি। বনের ঠিক মাঝখানে আছে একটি হরিণ প্রজনন কেন্দ্র। লহরিয়া বিট অফিস সংলগ্ন এই কেন্দ্রে দেখতে পাওয়া যায় চোখ জুড়ানো চিত্রা হরিণের বিচরণ। সেখানেও হনুমানের সমারোহ সকলকে মুগ্ধ করবেই। পাশেই সু-উচ্চ টাওয়ারে উঠলে মধুপুর পার্কের অভ্যমত্মরে সবুজ বৃÿ-রাজী দেখে কিছুÿণের জন্য হলেও মুগ্ধ হতে হয়। সেখান থেকে দোখলা রেস্ট হাউজের দিকে রওনা হলে রাসত্মার দু’পাশে দেখা যায় সবুজ শাল বন আর নানান প্রজাতির বৃÿরাজি। সেখানে নেই কোন জনারাণ্য। আছে শুধু শুনশান নিরবতা আর পাখ- পাখালির ডাক।
দোখলা নামক স্থাছে দোখলা রেস্ট হাউজ, চুনিয়া কটেজ, বকুল কটেজ, দুটি পিকনিক স্পট, জুই ও চামেলী বাগান। একটি ইউথ হোস্টেল ও একটি সু-উচ্চ টাওয়ার, আছে খেলার মাঠ, পানীয় জলের ব্যবস্থা, টয়লেট, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। এর পাশেই আছে একটি ছোট্ট বাজার, আশে-পাশে আছে আদিবাসীদের পলস্নী। সেখানে অবসরে ঘুরে বেড়ানোতে পাওয়া যায় বিমল আনন্দ। আদিবাসীদের জীবনধারা বিচিত্র। দোখলা পঁচিশমাইল রাসত্মার শেষে জলছত্র এলাকায় আদিবাসীদের নিজস্ব তাঁতে বুনান বিভিন্ন ধরণের রেশম বস্ত্র শিল্পের বিক্রয় কেন্দ্র ‘‘কারিতাস’’।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস